আলিপুরদুয়ারে বন্যা দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতি আমন ধানের, ভুটানের ডলোমাইট মিশ্রিত পলিতে নষ্ট ১০০ হেক্টর জমি
নিউজডেস্ক, দ্য ফোর্থ কলাম, আলিপুরদুয়ার, ৬ অক্টোবর ২০২৫ :-
রবিবারের দিনভর দুর্যোগে আলিপুরদুয়ার এক ব্লকের শিশামারা নদীর ঘোলা জলে প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে আমন ধান চাষ। ভুটান থেকে নেমে আসা ডলোমাইট মিশ্রিত পলি পড়ায় শালকুমার-১, শালকুমার-২, এবং পূর্ব কাঁঠালবাড়ি—এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ ধানের জমি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, এই তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ১০০ হেক্টরের মতো আমন ধানের ক্ষেত পলি পড়ে নষ্ট হয়েছে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে খবর, ক্ষতিগ্রস্ত এই সাতটি মৌজার আমন ধানের ক্ষেতের ক্ষতির রিপোর্ট ইতিমধ্যেই জেলা থেকে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। আলিপুরদুয়ার এক ব্লকের কৃষি আধিকারিক অজিত রায় বলেন, “তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ১০০ হেক্টরের মতো আমন ধানে পলি পড়েছে। সেই রিপোর্ট ওপর মহলে পাঠানো হয়েছে। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।”
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিবরণ
কৃষিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তিনটি পঞ্চায়েতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শালকুমার-১ পঞ্চায়েতে। এই পঞ্চায়েতের প্রধানপাড়া, নতুনপাড়া, মুন্সীপাড়া, এবং জলদাপাড়া—এই চারটি মৌজার আমন ধান পলি পড়ে নষ্ট হয়েছে।
এরপরেই রয়েছে শালকুমার-২ পঞ্চায়েত এলাকা, যেখানে সিধাবাড়ি ও সিরুবাড়ি—এই দুটি মৌজার আমন ক্ষেত ভুটান থেকে আসা ডলোমাইট মিশ্রিত পলিতে নষ্ট হয়েছে। তুলনায় কম ক্ষতি হয়েছে পূর্ব কাঁঠালবাড়ি পঞ্চায়েতের। সেখানকার শুধু পূর্ব কাঁঠালবাড়ি মৌজার গারারজোত এলাকার আমন ধান নষ্ট হয়েছে।
চাষিদের মাথায় হাত, উদ্বেগে স্থানীয় গ্রামপ্রধান
এই সময় আমনের পাশকাঠিতে ধানের ছড়া বের হওয়ার বা শিষ বের হওয়ার সময়। ঠিক সেই মুহূর্তেই এক দিনের দুর্যোগে ডলোমাইট মিশ্রিত পলি পড়ে ধান নষ্ট হওয়ায় আমন চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। সারা বছরের খাবার কীভাবে জুটবে, তা ভেবে পাচ্ছেন না কৃষকরা।
শালকুমার-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় রাভা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “ভুটানের পলি পড়ে প্রচুর আমন ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ডলোমাইট মিশ্রিত ওই পলিতে ঢাকা পড়ে যাওয়া আমন গাছ পরে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে কিনা তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা হচ্ছে।”
সোমবার ক্ষতিগ্রস্ত আমনের ক্ষেত ঘুরে দেখেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। তিনি এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন গঠনের দাবি পুনর্বার জানান। বিধায়ক বলেন, “ওই কমিশন গড়ে না উঠলে আগামী দিনে ভুটানের ডলোমাইট মিশ্রিত পলিতে ডুয়ার্সের কৃষিজ ফসলের আরও ব্যাপক ক্ষতি হবে।”